শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯

গণহত্যার শিকার ইয়েজীদি জনগণ অনুবাদ সুমনা সিনহা


কোনটি গণহত্যা আর কোনটি নয়, এ বিষয়ে জাতিসংঘেরনির্দিষ্ট সংজ্ঞাআছেফলে তদন্ত,তর্ক-বিতর্কহবে, বিশেষজ্ঞেরা রায় দেবেনতাদেররায়েরঅপেক্ষায়থাকলেওদেখারজন্যআমাদেরচোখআছে। এবংআমরাইতোমধ্যেইজানিযেইয়েজীদিজনগণেরউপরআগ্রাসনসর্বঅর্থে-গণহত্যারভয়াবহতারসংজ্ঞারসাথে মিলে যায় যেহেতু এর উৎস, একটি জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে "ধ্বংস" করার অভিপ্রায়। 

"খলিফাশাসনেরঅধীনেবর্ণবিদ্বেষকদাচিৎসহিংসতাঔপনিবেশিকতাদাসত্বপ্রথারএইপর্যায়েপৌছেছে

কুর্দিপূর্বপুরুষদেরবংশোদ্ধুভত,ইয়েজীদিরাচিরকালইইসলামেধর্মান্তরিতহতেপ্রত্যাখ্যানকরেছে,এমনকিঅটোমানসাম্রাজ্যেরঅধীনেথাকারসময়েওতাদেরস্বাধীনতারকঠিনমূল্যতাদের দিতে হয়েছে :তাদেরইতিহাসেরয়েছে ৭৩-টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং গণহত্যার প্রচেষ্টা। ইসলামপন্থীরাইয়েজীদি-দেরচেয়েইহুদীদেরপছন্দকরেযাদেরতারা"শয়তানেরউপাসকবলেডাকেশুধুমাত্রএইজন্যযেতারাসূর্য-দেবতাএবংদেবদূত-ময়ূরেরউপাসনাকরেযাকে"শয়তান"বলেগণ্যকরাহয়। খৃষ্টানসুফিপ্রভাবগুলিরসাথে সাথেমিথ্রা-ধর্মেঅনুপ্রাণিত,ইয়েজীদবাদেরকোনোধর্মগ্রন্থনেই, তারা এখনও জাত-কূল-প্রথা অনূসরণ করে এবংলেভান্টাইনমতালম্বিশেখআদীরপূজাকরে,যিনিদ্বাদশশতাব্দীতেতাঁরঅনুশীলনেরপ্রচূরনবায়নকরেছিলেন।  

পেশমের্গাদ্বারানিয়ন্ত্রিতমোসুলেরউত্তরে অবস্থিতএকটিএলাকারমধ্যে, তাদের পবিত্র মন্দিরটি জিহাদীদের দ্বারা এখনও কলুষিত হয়নি।প্রাণ বাচাঁতে যারা সক্ষম হয়েছে, তারা নিজেদেরকে শুদ্ধ করতে এখানে আসে। ধর্ষিত ও ইসলামে ধর্মান্তরিত এই মানুষেরা এখানে ভীড় করে পুনরায় « ইয়েজীদি » হওয়ার জন্য। গতশতাব্দীতেযখননারীরাঅটোমানখলিফাসৈন্যদ্বারাধর্ষিতহতেনতাঁরাএকইসাথেসম্প্রদায়চ্যুতহতেন। এখনআরতাহয়না। ইয়াজিদীদেরআধ্যাত্মিকনেতাবাবাশেখএইনারীদেরউপরদোষারোপকারীদেরচরমনিন্দাকরেছেন। একবাস্তবঅগ্রগতিযাক্ষতনিরাময়নাকরলেওজাহান্নাম-এরওপরআরেকজাহান্নাম-এরবোঝএড়াতেসাহায্যকরে

দুঃস্বপ্নের শুরু তিন বছর আগে, প্রায় একই দিনে, ২ আগস্ট ২০১৪-য়মোসুল দখল করার পরপরই, দায়েশ তার পোষা গুন্ডার দল পাঠিয়েছিল সিনজার আর তার পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে, ইয়েজীদি-দের অপহরণ করে আনার জন্যতাদেররক্ষাকরারজন্যগ্রামেরচারপাশেনিযুক্তপেশমের্গারাভীতগ্রস্তহয়েযায়। গ্রামবাসীরাইরাকীবিদেশিজিহাদি-বাহিনীরমুখেপড়েযায়। ছলেবলেকৌশলেতাদেরসবসম্পত্তিদখলকরারপর« খলিফার »ভাড়াটেদলপুরুষদেরট্রাক-উঠতেবাধ্যকরেতাদেরখতমকরার জন্য। তাদেরগণকবরস্থলসদ্যখুঁজেপাওয়া যাচ্ছে

ইয়েজীদি নারীদের ভাগ্য আরও খারাপ। একটি ঐতিহ্যবাহী রক্ষণশীল সমাজে, ধর্ষণের চেয়ে মৃত্যু মধুর। বিকৃতমনা জিহাদীরা বৃদ্ধা ও যুবতী, শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কা, কুমারী ও মায়েদের পৃথক করে, লেবেল লাগিয়ে, তাদের পশুর মত বিক্রি করতে শুরু করে।ফোটোতে দেখা যায় সম্পূর্ণ কালো বোরখায় ঢাকা নারীদের সারি, হাতে শেকল। বয়োজেষ্ঠ বর্ষীয়সীদের রাখা হয়েছিল শেকলবেঁধে, মাটির তলার ঘরে, অস্থায়ী-স্ত্রী হিসাবে ব্যবহার করার জন্যে।যখনআহতজিহাদি-দেরজন্যেতাদেররক্ত-শোষণকরানাহত... শিশুদেরবাছাইকরেবিক্রিকরাহতো। 

একটিবছরেরকন্যা-শিশুরদাম১৫০ইউরোথেকেশুরুকরেকয়েকহাজারইউরোপর্যন্তউঠতো।দায়েশের ভি.আই.পি-রা এবং বিদেশি যোদ্ধারা তাদের প্রথমেভোগকরতো।দায়েশেরলোকেদেরতোলাএকটিভিডিও-তেদেখাযায়যৌনদাসীদেরবিক্রিরআগেরদিনএক  শ্মশ্রুধারীউত্তেজিতহয়েচিৎকারকরছে:"আমারইয়েজীদিকোথায়আমারএকটানীল-চোখ-ওয়ালাচাই !", আরতারবন্ধুরাদাঁতবারকরেহাসছেএইএকটিদৃশ্যেপুরুষ আধিপত্যের সমস্তজান্তবতাধরাপরে। 

ক্রেতাদেরযখনক্লান্তিধরেযেতবা অন্য মেয়ে কিনতে চাইতো, তারা তখনতাদের চোরাচালানকারীদের কাছে বিক্রি করেদিতো। এভাবেইএনজিও বা ইরাকি আঞ্চলিক সরকার তাদের ফের কিনে নিয়ে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। হাজারহাজারনারীভয়াভয়তাথেকেমুক্তিপেয়েছেন। কিছু পালিয়ে গেছেন।দায়েশেরবিরুদ্ধে অস্ত্রধরেছেনশতশতনারীরা। অন্যরাএখনওরাক্কায়বন্দী

কানাডায়, এক মুক্তিপাওয়ানারীজানতে পেরেছেন যে তাঁর ছেলে ইমাদ জীবিত ছিলেন। মোসুলের ইরাকী সেনা কর্তৃক মুক্তি পাওয়া, রোমশাবৃত, কঙ্কালসার বন্দীদের একজন তিনি। নাগরিকরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মা এবং তার পুত্রকে পুনরায় একত্রিত করতে তৎপর হয়েছেন।জাহান্নাম তাই বলে এখনও শেষ হয় নি। আরো দীর্ঘ সময় ধরে তা জ্বলবে। আর জ্বালাবে শরীর, হৃদয় এবং মস্তিস্ক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন